ম্যাগনেসিয়াম এর অভাবে কি হয়
|

মানবদেহে ম্যাগনেসিয়াম এর অভাবে কি হয়?

ম্যাগনেসিয়াম মানবদেহের অতি প্রয়োজনীয়  মিনারেলস গুলোর মধ্যে একটা। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি, ঘুমের মান বাড়ানো,ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করা, রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করা ছারাও মানব দেহের অনেক উপকার করে ম্যাগনেসিয়াম। এটি সাপ্লিমেন্ট এবং বাদাম ও শাকসবজির মতো কিছু খাবার থেকেও পাওয়া যায়।ম্যাগনেশিয়াম মস্তিষ্ক ও শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও আমরা অনেকেই জানিনা ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে কি হয়? 

এই আর্টিকেলে ম্যাগনেসিয়ামের  প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আদ্যপ্রান্ত জানানোর চেষ্টা করব। সেই সাথে জানাবো ম্যাগনেশিয়ামের ১৬ টি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং কোন কোন খাবার গ্রহণে  শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি মেটানো সম্ভব সেই সম্পর্কে।

প্রতিদিন কতটুক ম্যাগনেসিয়াম খাওয়া যায়

ম্যাগনেসিয়াম (Magneseum) এর কাজ কি?

ম্যাগনেশিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান যা শরীর সুস্থভাবে কাজ করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি মস্তিষ্ক এবং হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখতে সহায়তা করে।

ম্যাগনেশিয়াম মানব শরীরের চতুর্থ সর্বাধিক পরিমাণে উপস্থিত খনিজ উপাদান।

এটি ডি.এন.এ (D.N.A)  তৈরির মতো ৬০০ টিরও বেশি কোষীয় বীপাক ক্রিয়ার সাথে জড়িত। এমনকি আমাদের দেহে প্রোটিন তৈরি সহ পেশি সংকোচন ও প্রসারণ এর কাজে সহায়তা করে।

এর  এত গুরুত্ব সত্ত্বেও, প্রায় ৭৮%  এশিয়ার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দৈনিক চাহিদার পুরোটা পূরণ করতে পারে না।

ম্যাগনেসিয়াম এর অভাবজনিত লক্ষণঃ

ম্যাগনেসিয়ামের অভাবজনিত লক্ষন গুলু নিম্নরুপঃ

  • ক্ষুধা হ্রাস- Anorexia
  • বমি বমি ভাব এবং বমি -nausia & vomiting
  • ক্লান্তি-Diziness
  • অসাড়তা এবং ঝিঁঝি ধরা- Nubness
  • পেশী সংকোচন এবং খিঁচুনি -Muscle & leg cramp
  • খিঁচুনি 
  • ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন।
  • অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন – Irregular heart bit
  • হাইপোক্যালসেমিয়া (রক্তে ক্যালসিয়ামের স্তর কমে যাওয়া )
  • হাইপোক্যালেমিয়া (রক্তে পটাসিয়ামের স্তর কমে যাওয়া)

পেশীতে খিঁচুনি বা খিল বা সিটকা ধরা এবং ডায়রিয়া বা বমি, ক্লান্তি,শক্তির অভাব, অনিদ্রা, উচ্চ মাত্রার উদ্বেগ এবং বিষন্নতা দেখা দিতে পারে।

ম্যাগনেসিয়াম এর উপকারিতাঃ

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা অক্ষুন্ন রাখে: 

ম্যাগনেসিয়াম আপনার মস্তিষ্ক ও শরীরের মধ্যে নিউরো ট্রান্সমিশন বা সংকেত প্রেরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি N-methyl-D-aspartate (NMDA) রিসেপ্টরগুলির জন্য গেটকিপার হিসেবে কাজ করে। যা মানবদেহের স্নায়ু কোষে পাওয়া যায় এবং মস্তিষ্কের বিকাশ, স্মৃতি শক্তি স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। 

স্বাস্থ্যবান প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম NMDA রিসেপ্টরগুলির ভিতরে থাকে, যা দুর্বল সিগন্যাল দ্বারা উদ্দীপিত হওয়া থেকে স্নায়ু কোষগুলিকে রক্ষা করে।

যখন মানব শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা কম থাকে, তখন কম NMDA রিসেপ্টরগুলি বন্ধ থাকে। এর মানে হল তারা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বার উদ্দীপিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। এই ধরনের অতিরিক্ত উদ্দীপনা স্নায়ু কোষকে ধ্বংসও করতে পারে এবং  সেই সাথে মস্তিষ্কের ক্ষতিও করতে পারে।

সারাংশ:ম্যাগনেসিয়াম NMDA রিসেপ্টরের জন্য গেটকিপার হিসেবে কাজ করে। যা মস্তিষ্কের স্বাভাবিকবিকাশ, স্মৃতি শক্তির সঙ্গে জড়িত। এটি স্নায়ু কোষগুলিকে অতিরিক্ত উদ্দীপিত হওয়া থেকে রক্ষা করে। 

বাচ্চাদের ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার

স্বাভাবিক হৃদস্পন্দন বা হার্টবিট বজায় রাখে: 

ম্যাগনেসিয়াম হার্ট বিট বা হৃদস্পন্দন বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি প্রাকৃতিকভাবে ক্যালসিয়ামের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে। যা হৃদপিণ্ডের সংকোচনের জন্য আবশ্যকীয়। যখন ক্যালসিয়াম  মানব দেহের হৃদযন্ত্রের কোষে প্রবেশ করে তখন এটি পেশীর তন্তু গুলিকে সংকুচিত করতে উদ্দীপিত করে। ম্যাগনেসিয়াম এই প্রভাবের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং এই কোষগুলিকে শিথিল করতে কাজ করে।

ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের এই চলাচল মানব দেহের হৃদপিণ্ডের কোষগুলিকে স্বাভাবিক হার্টবিটে বজায় রাখতে সাহায্য করে। যখন আপনার শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা কম থাকে, তখন ক্যালসিয়াম আপনার হৃদযন্ত্রের কোষগুলিকে অতিরিক্ত উদ্দীপিত করে। যার ফলে হার্টবিট বা হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করে বা  অনেক সময় অনিয়মিত হৃদস্পন্দন ও সৃষ্টি করতে পারে। যার ফলে আপনার আমার জীবন সংকটাপন্নও হতে পারে।

সারাংশ: ম্যাগনেসিয়াম মানবদেহের হৃদযন্ত্রের কোষগুলিকে শিথিল করতে সাহায্য করে ক্যালসিয়ামের বিরুদ্ধে কাজ করে। যা সংকোচনকে উদ্দীপিত হয় । এই খনিজগুলি পরস্পর প্রতিযোগিতা করে যাতে হৃদপিণ্ডের কোষগুলি সঠিকভাবে সংকুচিত ও শিথিল থাকে।

মাংসপেশির সংকোচন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: 

ম্যাগনেসিয়াম মাংসপেশির সংকোচন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হৃদপিণ্ডের মতো ম্যাগনেসিয়াম প্রাকৃতিকভাবে ক্যালসিয়ামের প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে, মাংসপেশিকে শিথিল করতে সাহায্য করে।

মানব দেহের মাংস পেশিতে থাকা ক্যালসিয়াম, ট্রোপোনিন সি এবং মায়োসিনের মতো প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়। এই প্রক্রিয়াটি প্রোটিনগুলির আকৃতি পরিবর্তন করে যা সংকোচন পক্রিয়া তৈরি করে। ম্যাগনেসিয়াম এই একই সংযোগস্থলে ক্যালসিয়ামের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে মানব দেহের মাংসপেশিকে শিথিল করতে সাহায্য করে।

যদি মানব শরীরে পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়াম না থাকে, তাহলে ক্যালসিয়ামের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে না পেরে মাংসপেশি অতিরিক্ত সংকুচিত করে ফেলে, যার ফলে খিঁচুনি বা পেশির টান পরে।

এই কারণে, মাংসপেশির খিঁচুনি নিরাময়ের জন্য সাধারণত ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেণ্ট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। 

**** তবে, গবেষণায় ম্যাগনেসিয়ামের খিঁচুনি উপশম করার ক্ষমতা সম্পর্কে মিশ্র ফলাফল পাওয়া গেছে এবং কিছু গবেষণায় কোনো উপকারই পাওয়া যায়নি।

সারাংশ: ম্যাগনেসিয়াম প্রাকৃতিক ক্যালসিয়াম প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে। সংকোচনের পরে মানব দেহের মাংসপেশির কোষগুলিকে শিথিল করতে সাহায্য করে। যখন ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা কম থাকে, তখন মানব দেহের মাংসপেশি অতিরিক্ত সংকুচিত হতে পারে এবং খিঁচুনি বা পেশির টান ধরার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

ম্যাগনেসিয়াম এর উপকারিতা

শরীরে শত শত বায়োকেমিক্যাল বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে:

ম্যাগনেসিয়াম মানব শরীরের প্রতিটি কোষে পাওয়া যায়। এই খনিজ টি কোষের সঠিকভাবে কাজ করতে খুবই প্রয়োজন। মানব শরীরের প্রায় ৬০% ম্যাগনেসিয়াম হাড়ে থাকে আর বাকি অংশ মাংসপেশি তে থাকে, নরম টিস্যু এবং রক্ত সহ অন্যান্য তরলে ও অল্প কিছু পরিমান থাকে।

এর প্রধান ভূমিকা হলো কোফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করা এবং একটি সহকারী অণু হিসেবে। যা এনজাইমের মাধ্যমে ক্রমাগত ভাবে বায়োকেমিক্যাল বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। এটি মানব শরীরে ৬০০ টিরও বেশি বিক্রিয়ায় জড়িত, যেমন:

  • শক্তি উৎপাদন: খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে
  • প্রোটিন গঠন: অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে নতুন প্রোটিন তৈরি করে
  • জিন রক্ষণাবেক্ষণ: ডিএনএ এবং আরএনএ তৈরি এবং মেরামতে সহায়তা করে
  • মাংসপেশির চলাচল: মাংসপেশির সংকোচন এবং শিথিলকরণে সহায়তা করে
  • নির্বাহী স্নায়ুতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ: নিউরোট্রান্সমিটার নিয়ন্ত্রণ করে যা মানব শরিরের মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে বার্তা পাঠায়।

তবে, গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে প্রায় ৫০% আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্করা দৈনিক চাহিদার চেয়ে কম ম্যাগনেসিয়াম গ্রহন করেন।

সারাংশ:ম্যাগনেসিয়াম মানব শরীরের শত শত রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সহায়তা করে। তবুও অনেক মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় কম ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করে যা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল না।

ব্যায়াম এর ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেঃ


বিশ্রামকালের তুলনায় ব্যায়ামের সময় শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের প্রয়োজন বেশি হয়। ম্যাগনেসিয়াম রক্তে থাকা শর্করা আপনার পেশীতে স্থানান্তর করতে এবং ল্যাকটেট দূর করতে সাহায্য করে। যা ব্যায়ামের সময় জমে এবং ক্লান্তি সৃষ্টি হয়।

অধিকাংশ গবেষণা দেখায় যে ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্টস বিশেষভাবে বয়স্ক ব্যক্তিদের এবং যারা এই পুষ্টি উপাদান এর অভাবে ভুগছেন তাদের ব্যায়াম কর্মক্ষমতা ব্রিদ্ধি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

২০১৯ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে ৩ সপ্তাহ ধরে দিনে ৪০০ মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করা পেশাদার পুরুষ সাইক্লিস্টদের পেশীর পুনরুদ্ধার এবং সাইক্লিং পরবর্তী পেশী ক্ষতি থেকে সুরক্ষায় ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ না করা সাইক্লিস্টদের তুলনায় উন্নতি দেখা গেছে। তবে এ বিষয়ের উপর আরো গবেষণার প্রয়োজন।

সারাংশ:কয়েকটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে ব্যায়াম এর কর্মক্ষমতা উন্নত করতে ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্টস বেশ কার্যকরী। তবে এ বিষয়ের উপর আরো গবেষণার প্রয়োজন।

বিষণ্ণতা মোকাবিলায় ম্যাগনেসিয়াম কার্যকরীঃ

ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং মেজাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ম্যাগনেসিয়াম এর অভাব বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

২০২০ সালের একটি পর্যালোচনা সুপারিশ করেছে যে মানসিক চাপ মানব শরীরে ম্যাগনেসিয়াম কমিয়ে দিতে পারে।  যা প্রকারান্তে বিষন্নতা বাড়িয়ে দেয়। 

এছাড়াও, এই মিনারেলস এর সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ বিষণ্ণতার লক্ষণগুলি কমাতে সাহায্য করে।

একটি ৮-সপ্তাহের গবেষণায়, এই মিনারেলসের অভাবে থাকা মানুষের বিষণ্ণতার লক্ষণগুলি প্রতিদিন ৫০০ মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করে উল্লেখযোগ্য হারে উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে।

এছাড়া, ১২৬ জন মানুষের মধ্যে ৬-সপ্তাহের একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, ম্যাগনেসিয়াম স্তরের পার্থক্য বিবেচনায় না রেখে  প্রতিদিন ২৪৮ মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগের লক্ষণগুলি উল্লেখযোগ্য হারে কম বলে পরিলক্ষিত হয়েছে।  

সারাংশ:ম্যাগনেসিয়ামের অভাব বিষণ্ণতার সাথে সম্পর্কিত। তাই, ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ বিষণ্ণতার লক্ষণগুলি কমাতে সহায়ক।

ম্যাগনেসিয়াম এর অভাবজনিত লক্ষণ

ম্যাগনেসিয়াম ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করেঃ

গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রায় ৪৮% টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে ম্যাগনেসিয়ামের স্তর কম, যা শরীরের রক্তের গ্লুকোজ এর নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

অধিকাংশ গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে যারা বেশি ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করে তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কম থাকে।

একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সহায়ক। যা রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অন্য একটি পর্যালোচনা রিপোর্ট করেছে যে, ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের রক্তের গ্লুকোজ এর  লেভেল এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করেছে।

সারাংশ:ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট রক্তে Glucose level, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের অন্যান্য ঝুঁকি পূর্ণ উপাদানগুলির উন্নতি করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

হার্ট এর স্বাস্থ্য ভাল রাখেঃ

ম্যাগনেসিয়াম আমাদের হার্ট কে সুস্থ ও শক্তিশালী রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২০২১ সালের একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্ত চাপ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

আরেকটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে উচ্চ মাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণে হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি অনেক আংশেই কমে যায়।

ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট হৃদরোগের জন্য দায়ী কোলেস্টেরল যেমন ট্রাইগ্লিসেরাইড, LDL (খারাপ) কলেস্টেরল, HDL (ভালো) কলেস্টেরল এবং সিস্টোলিক রক্তচাপের লেভেল স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সারাংশ:ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে এবং হৃদরোগের জন্য বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান কমাতে সাহায্য করে।তবে এর উপর, আরও গবেষণার প্রয়োজন।

প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন কমাতে সহায়তা করেঃ

ম্যাগনেসিয়ামের কম গ্রহণ করলে শরীরে প্রদাহ বা  ইনফ্লামেশন এর ঝুঁকি বেড়ে যায়, যা পরবর্তীতে বার্ধক্য এবং দীর্ঘস্থায়ী  রোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে।

১১টি গবেষণার পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্টস সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন (CRP) এর স্তর কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সি.আর.পি বৃদ্ধি শরীরের প্রদাহ বৃদ্ধি পাওয়ার বৃদ্ধি পাওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে একটি চিহ্ন হিসেবে কাজ করে।

অন্যান্য গবেষণা ও দেখা যায়, যে ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্টস CRP এবং অন্যান্য প্রদাহের চিহ্ন, যেমন ইন্টারলিউকিন-৬ (IL-6), কমাতে সাহায্য করে।

তাছাড়া, কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ম্যাগনেসিয়াম এর অভাবে শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বৃদ্ধি পায়।   অক্সিডেটিভ ট্রেস শরীরে  ইনফ্লামেশন বৃদ্ধির অন্যতম চিহ্ন। 

সারাংশ:ম্যাগনেসিয়াম প্রদাহের চিহ্ন যেমন CRP এবং ইন্টারলিউকিন-৬ কমিয়ে প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

মাইগ্রেন প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করেঃ 

মাইগ্রেনের মাথাব্যথায় প্রচণ্ড যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়। সাথে প্রায়ই বমি, বমি ভাব এবং আলো ও শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতার সৃষ্টি হয়।

কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন যে মাইগ্রেনের রোগীরা অন্যান্যদের তুলনায় বেশি ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে ভোগেন। 

একাধিক গবেষণা দেখিয়েছে যে ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্টস মাইগ্রেনের মাথাব্যথা প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

একটি পুরনো গবেষণায় দেখা গেছে যে সাধারণ ওষুধের  চেয়ে ১ গ্রাম ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট নেওয়া তীব্র মাইগ্রেন আক্রান্ত রোগী  গতানুগতিক মাইগ্রেনের ঔষধের তুলনায় দ্রুত এবং কার্যকরভাবে ব্যথার উপশম হয়েছে।

ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলেও মাইগ্রেনের উপসর্গ অনেক ক্ষেত্রে কমে যায়।

সারাংশ:মাইগ্রেনের রোগীদের ম্যাগনেসিয়ামের স্তর কম থাকতে পারে। কিছু গবেষণা দেখায় যে এই মিনারেলস টি সাপ্লিমেন্ট হিসাবে গ্রহণ করলে মাইগ্রেন আক্রমণ থেকে রিলিফ পাওয়া যায়।

বড় ও বাচ্চাদের ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার

Premestrual Syndrome বা পি.এম.এসের লক্ষণ কমাতে সাহায্য করেঃ

Premestrual Syndrome(পি.এম.এস) হল গর্ভধারণের উপযুক্ত বয়সের মহিলাদের শরীরের জন্য একটি সাধারণ অবস্থা। এটি প্রায়ই ঋতুস্রাব শুরুর পূর্বে স্তন  ও শরীরের ব্যথা,পেটের ক্র্যাম্প, ক্লান্তি, এবং বিরক্তি জাতীয় লক্ষণ সৃষ্টি করে।

কিছু গবেষণা suggests যে ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্টগুলি পি.এম.এসে-র লক্ষণ এবং  ঋতুস্রাব  এর সময় অন্যান্য অবস্থা যেমন মাসিকের ক্র্যাম্প এবং মাইগ্রেন আক্রমণ উপশমে সহায়তা করে।

এটি হতে পারে কারণ, ম্যাগনেসিয়ামের স্তর মাসিক চক্রের throughout পরিবর্তিত হয়,  এবং যার অভাবের কারণে পি.এম.এসের লক্ষণকে বাড়িয়ে তোলে। তাই, সাপ্লিমেন্টগুলি লক্ষণের তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন ৩০০ মিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ কলেজের ছাত্রীদের মধ্যে পি.এম.এসের কারণে ফোলাভাব, বিষণ্ণতা, এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করেছে। 

তবে, আরও সাম্প্রতিক এবং উচ্চ মানের গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে যাতে নির্ধারণ করা যায় যে এই মিনারেলস টি  প্রিমিন্সত্রুয়াল সিনড্রোম এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সারাংশ:কিছু গবেষণা Suggests করে যে ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্টগুলি পি.এম.এসের লক্ষণ কমাতে সহায়ক হতে পারে, তবে ক্ষেত্রে আরও গবেষণা প্রয়োজন।

আরও পড়ুনঃ জানেন কি? কাঁঠালের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা কি?

হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেঃ

ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং হাড়ের ক্ষয় থেকে রক্ষা করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মিনারেলস। প্রকৃতপক্ষে, মানব শরীরের ৫০-৬০% ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের মধ্যে পাওয়া যায়।

কিছু গবেষণা এই খনিজের অভাবে অস্টিওপোরোসিস বা হার ক্ষয়ের মত রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

একটি ৩ বছরের গবেষণায় ৩৫৮ জন হেমোডায়ালিসিস (রক্ত থেকে বর্জ্য এবং জল অপসারণে সহায়তা করার একটি চিকিৎসা) নিচ্ছেন এমন রোগীদের, যাদের ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাদের  হাড় ক্ষয় রগের ঝুকি তিন গুণ বেশি ছিল।

এছাড়াও, একটি সাম্প্রতিক পর্যালোচনা ও ১২টি গবেষণার উপর ভিত্তি করে উচ্চ ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণকে হিপ এবং ফেমোরাল নেকের হাড়ের খনিজ ঘনত্ব বৃদ্ধির সাথে যুক্ত করেছে।

সারাংশ:ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্যর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিছু গবেষণা ম্যাগনেসিয়ামের সঠিক মাত্রায় গ্রহণ অস্টিওপোরোসিস, হাড় ভাঙা এবং হাড়ের ক্ষয় প্রতিরধে গুরুত্বপূর্ণ মিনারেলস হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

 ম্যাগনেসিয়াম ভালো ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেঃ

ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট সাধারণত নিদ্রার সমস্যা।যেমনঃ অনিদ্রার জন্য প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

কারণ ম্যাগনেসিয়াম ঘুমের সাথে সম্পর্কিত কয়েকটি নিউরোট্রান্সমিটার নিয়ন্ত্রণ করে। যেমনঃ গামা অ্যামিনোবিউটেরিক অ্যাসিড।

বৃদ্ধদের মধ্যে একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের ফলে গড় ঘুমের সময়ের ১৭ মিনিট বেড়ে গিয়েছিল।

আরেকটি গবেষণায় প্রায় ৪,০০০ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই মিনারেলস উচ্চ মাত্রা ঘুমের গুণমান এবং সময়কাল বৃদ্ধি করেছিল।

সারাংশ:খাবার বা সাপ্লিমেন্টের মাধ্যমে ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ বাড়ানো নিদ্রার সমস্যা সমাধানে সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং ঘুমের গুণমান উন্নত করতে সাহায্য করে।

ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা

Anxity  বা মানসিক উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করেঃ 

কিছু গবেষণা সুপারিশ করে যে ম্যাগনেসিয়াম মানসিক উদ্বেগের চিকিৎসা এবং প্রতিরোধে সহায়ক  ভূমিকা পালন করে।

উদাহরণস্বরূপ, ৩,১৭২ জন ইরানি প্রাপ্তবয়স্কদের একটি গবেষণায় ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণের বৃদ্ধি উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতার ঝুঁকি অনেকটা-ই কমিয়ে দিয়েছিল।

একইভাবে, একটি ৬-সপ্তাহের গবেষণায় দেখা গেছে দৈনিক ২৪৮ মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণের মাধ্যমে উদ্বেগের উপসর্গগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

অন্যান্য গবেষণ সুপারিশ করে যে ম্যাগনেসিয়াম ঘাটতি আপনার শরীরের স্ট্রেসের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়, যা উদ্বেগের উপসর্গগুলি বাড়িয়ে দিতে পারে।

সারাংশ:ম্যাগনেসিয়াম উদ্বেগের উপসর্গগুলি কমাতে এবং স্ট্রেস কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। তবে  এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।

রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করেঃ

ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণে উচ্চ রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।

গবেষণা দেখায় যে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে এমন ব্যক্তিদের, এই মিনারেলসের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের মাধ্যমে  উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয়েছে।

২০২১ সালের একটি  পর্যালোচনায় ৭টি গবেষণার উপর ভিত্তি করে দেখা গেছে যে, টাইপ ২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রতিদিন ৩০০ মিগ্রা বা তার বেশি ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে সিস্টোলিক রক্তচাপ ৫.৭৮ m.m.of Hg এবং ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ২.৫ m.m.of Hg কমে যায়।

পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেঃ

ম্যাগনেসিয়াম মানব শরীরে  পরিপাকতন্ত্রের  স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে  সহায়তা করে। এটি খাদ্যকে ভাঙ্গতে সাহায্য করে এবং মানব শরীরের রক্তপ্রবাহে পুষ্টি শোষণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি পেটের পেশীগুলিকে শিথিল করে এবং মল নরম করার জন্য প্রয়োজনীয় জল বা পানি নিয়ে আসতে সহায়তা করে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়তা করে। 

গর্ভবতী মায়েদের জন্য ম্যাগনেসিয়াম এর গুরুত্বঃ 

গর্ভবতী মায়েদের জন্য ম্যাগনেসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ মিনারেলস। ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে একলামশিয়া ও  প্রি একলামশিয়া রোগ হতে পারে। যা গর্ভবতী মায়ের জীবন সংকটা পূর্ণ করে তুলতে পারে। যদি অধিকাংশ  প্রিনেটাল সাপ্লিমেন্ট এ ম্যাগনেসিয়াম থাকে তবুও একলামশিয়া রোগের কথা বিবেচনায় ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার ও সাপ্লিমেন্ট গর্ভবতী মাকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। 

বয়স অনুযায়ী মানব শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের দৈনিক চাহিদার পরিমাণঃ

 নিম্নে বয়স লিঙ্গ ও শারীরিক অবস্থার উপর  নির্ভর করে দৈনিক ম্যাগনেসিয়ামের চাহিদার একটি তালিকা দেয়া হলোঃ

বয়সপুরুষমহিলাগর্ভবতীবুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মা
০-৬ মাস৩০ মি.গ্রাম৩০ মি.গ্রাম
৭-১২ মাস৭৫ মি.গ্রাম৭৫ মি.গ্রাম
১-৩ বছর৮০ মি.গ্রাম৮০ মি.গ্রাম
৪-৮ বছর১৩০ মি.গ্রাম১৩০ মি.গ্রাম
৯-১৩ বছর২৪০ মি.গ্রাম২৪০ মি.গ্রাম
১৪-১৮ বছর৪১০ মি.গ্রাম৩৬০ মি.গ্রাম৪০০ মি.গ্রাম৩৬০ মি.গ্রাম
১৯-৩০ বছর৪০০ মি.গ্রাম৩১০ মি.গ্রাম৩৫০ মি.গ্রাম৩১০ মি.গ্রাম
৩১-৫০ বছর৪২০ মি.গ্রাম৩২০ মি.গ্রাম৩৬০ মি.গ্রাম৩২০ মি.গ্রাম
৫১+ বছর৪২০ মি.গ্রাম৩২০ মি.গ্রাম
source

বড় ও বাচ্চাদের ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার:

নিম্নে প্রাপ্তবয়স্ক ও বাচ্চাদের ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবারের তালিকা দেওয়া হলোঃ

ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবারের নামপরিমানম্যাগনেসিয়াম পরিমান (মিঃগ্রাঃ)দৈনিক চাহিদার শতকরা হার %
মিষ্টিকুমড়ার ভাজা বিচি ১ আউন্স১৫৬৩৭%
চিয়া সিড১ আউন্স১১১২৬%
আল্মন্ডস শুকনো ভাজা১ আউন্স৮০১৯%
পালং শাক সিদ্ধ১কাপ৭৮১৯%
কাজু বাদাম শুকনো ভাজা১ আউন্স৭৪১৮%
চিনা বাদাম তেলে ভাজা১/৪ কাপ৬৩১৫%
সিরিয়াল (গম ভাঙ্গা)২টা বর বিস্কুট৬১ ১৫%
সয়ামিল্কপ্লেইন বা ভ্যানিলা৬১১৫%
কালো মটরশুটি রান্না করা১/২ কাপ৬০১৪%
চিনাবাদাম মাখন২ চামচ৪৯১২%
আলু চামড়া সহ  সিদ্ধ৩.৫ আউন্স৪৩১০%
লাল চাউল রান্না করা১/২ কাপ৪২১০%
দই কম ফ্যাট যুক্ত৮ আউন্স৪২১০%
ব্রেকফাস্ট সিরিয়ালএকবারের খাবার৪২১০%
ওটমিল১ প্যাকেট৩৬৯%
বর শিম বা কাটরা শিম সিদ্ধ১/২ কাপ৩৫৮%
পাকা কলামিডিয়াম সাইজ৩২৮%
দুধ১ কাপ২৪-২৭৬%
কিসমিস১/২ কাপ২৩৫%
লাল আটার রুটি১ ফালি২৩৫%
অ্যাভোকাডো১/২ কাপ২২৫%
মুরগি হাড় ছাড়া রোষ্ট৩ আউন্স২২৫%
গরুর মাংস৩ আউন্স২০৫%
ব্রকলি রান্না করা১/২ কাপ১২৩%
সাদা  ভাত১/২ কাপ১০২%
আপেলমাঝারি সাইজের ১ টা২%
গাজর কাঁচা অবস্থায়মাঝারি সাইজের ১ টা২%
source

ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত ফল  (magnesium rich fruits) :

কলা, পেপে, অ্যাভোকাডো, মিষ্টি কুমড়া ও এর বিচি,বাদাম,পেয়ারা,জাম,জাম্বুরা বা বাতাবি লেবু, কিসমিস,তেতু্‌ল,কাঁঠাল,স্ট্রবেরি

ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত সবজি (magnesium rich vegetable’s) :

আলু, মিষ্টি আলু, ভুট্টা, মটর শুটি,পালং শাক,ব্রকলি,ফুল কপি

FAQ

ম্যাগনেসিয়াম এর অভাবে কি হয়? সেই সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

না দৈনিক চাহিদার অতিরিক্ত ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করা শরীরের জন্য ভালো না। এতে কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ৪০০ মিলিগ্রামের বেশি নয়। 

মাথা ঘোরা, বমি  বমি ভাব, ডায়রিয়া, কিডনির সমস্যা,  দুর্বলতা, দেখা দিতে পারে। 

এ রকম কোন গবেষণা পাওয়া যায় নাই যে অতিরিক্ত ম্যাগনেসিয়াম খেলে রাতে বেশি ঘাম হয়। 

পাকা কলাতে সবচেয়ে বেশি ম্যাগনেসিয়াম থাকে। 

কলা, পেপে, অ্যাভোকাডো, মিষ্টি কুমড়া ও এর বিচি,বাদাম,পেয়ারা,জাম,জাম্বুরা বা বাতাবি লেবু, কিসমিস,তেতু্‌ল,কাঁঠাল,স্ট্রবেরি, চিয়া সিড,খোসা সহ আলু, মিষ্টি আলু, ভুট্টা, মটর শুটি,পালং শাক,ব্রকলি,ফুল কপি।

ম্যাগনেসিয়াম কিছুটা ক্যালসিয়ামের মতো শুষিত হয়।ম্যাগনেসিয়াম  মানব শরীরের গাটে বিশেষ করে স্মল ইন্টারেস্টাইনে শোষিত হয় এবং তা হাড়ের মধ্যে জমা থাকে। তবে শরীরে অতিরিক্ত  ম্যাগনেসিয়াম কিডনির মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। 

বিশেষ করে পেপে, বাদাম,পেয়ারা,জাম,জাম্বুরা বা বাতাবি লেবু, কিসমিস,তেতু্‌ল,কাঁঠাল,স্ট্রবেরি, চিয়া সিড,খোসা সহ আলু, মিষ্টি আলু, ভুট্টা, মটর শুটি,পালং শাক,ব্রকলি,ফুল কপি, কলা,মিষ্টি কুমড়া ও এর বিচি,অ্যাভোকাডো  ইত্যাদি খাবার গ্রহণের মাধ্যমে ম্যাগনেসিয়ামের অভাব দূর করা সম্ভব।

ম্যাগনেসিয়ামকে প্রাকৃতিক রক্ত পাতলা করার উপাদান হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কারণ এটি রক্তচাপ কমাতে, প্লেটলেটগু এর জমাট বাঁধা কমাতে, প্রদাহ হ্রাস করতে, ফাইব্রিন গঠনে বাধা দেয় এবং উচ্চ মাত্রায় ক্যালসিয়াম উপস্থিত থাকলে  সেই মাত্রা নিয়ন্ত্রণে  রাখে।

ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত সাপ্লিমেন্ট অধিক পরিমাণে খেলে মুখ শুকিয়ে যেতে পারে। তাছাড়া স্বাভাবিক ডোজে ম্যাগনেসিয়াম খেলে মুখ শুকিয়ে যায় না।

শরীরে ম্যাগনেসিয়াম শোষণের পরে অতিরিক্ত ম্যাগনেসিয়াম কিডনি দিয়ে বের হয়ে যায়। তাই কিডনি রোগে আক্রান্ত রুগি ও হার্ট এর রোগে আক্রান্ত রুগীদের ম্যাগনেসিয়াম তাদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়। 

হ্যাঁ ম্যাগনেসিয়াম কে প্রাকিতিক বিটা ব্লকার বলা হয়। ম্যাগনেসিয়াম ব্লাড ভেসেল এর দেওাল এর ইনজুরি প্রতিরোধ করে সেই সাথে ক্যালসিয়াম কে হার্ট সেল ও আর্টারি তে প্রবেশে বাধা দেয়।

হ্যাঁ আয়রন ক্যালসিয়াম এর বড়ির মতো  ম্যাগনেসিয়াম বরি ও আকারে বড় হয়। কারণ এটিও এক ধরনের মিনারেল এবং মিনারেলের রাসায়নিক গঠন স্বাভাবিক রাখার জন্য এমনটা হয়ে থাকে। 

ক্রনিক ম্যাগনেসিয়াম এর অভাব জনিত লক্ষন থাকলে মুখে খওয়া ম্যাগনেসিয়াম খেলে এর অভাব পূরণ হতে প্রায় ৪০ সপ্তাহ সময় লাগে।

যখন মানব শরীরে ম্যাগনেসিয়াম এর অভাব জনিত লক্ষন গুলী ব্যাপক ভাবে প্রকাশ পায় এবং রক্তে magnesium level স্বাভাবিক এর থেকে কমে যায় তখন ম্যাগনেসিয়াম supplement হিসেবে গ্রহন করা উচিত।

গবেষণা বলছে ম্যাগনেসিয়াম ও এর সাপ্লিম্যান্ট অনিয়ন্ত্রিত রক্ত চাপের উপর প্রভাব ফেলতে ৩-৪ সপ্তাহ সময় নিয়ে থাকে।

হ্যাঁ। পেশি ব্যাথায় ম্যাগনেসিয়াম তেল বেশ ভাল কাজ করে।

এই তথ্য শুধুমাত্র শিক্ষা এবং সচেতনতার উদ্দেশ্যে প্রদান করা হয়। এটি কোনও স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার দ্বারা চিকিৎসার বিকল্প নয় এবং কোনও মেডিকেল অবস্থার নির্ণয় বা চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। তথ্যের যথাযথতা নির্ধারণের জন্য এবং কোন ঔষধ গ্রহণের আগে পাঠকদের একজন নিবন্ধিত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। pustibd.com তথ্যের সঠিকতা, পর্যাপ্ততা, সম্পূর্ণতা, বৈধতা, নির্ভরযোগ্যতা বা উপযোগিতা সম্পর্কিত কোনও গ্যারান্টি বা ওয়্যারেন্টি (স্পষ্ট বা উহ্য) সরবরাহ করে না; এবং এর উদ্ভূত কোনও দায়বদ্ধতা অস্বীকার করে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *