জানেন কি? কাঁঠালের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা কি?
আমাদের অনেক সুপরিচিত ও জনপ্রিয় একটি ফল কাঁঠাল। এটি বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা এবং আমেরিকার বিভিন্ন অংশে চাষ করা হয়।
পাকা কাঁঠাল মিষ্টি, সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর বলে অতি প্রাচীন কাল থেকেই সমগ্র এশিয়ান অঞ্চলেই জনপ্রিয়। তবে আজ আমরা এই আর্টিকেল এ পাকা কাঁঠালের উপকারিতা নিয়ে নয়, বরং আলোচনা করব কাঁঠালের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। প্রতিটি কাঁঠালে আকার ভেদে ১০০ থেকে ৫০০টি ভোজ্য বা খাওয়ার যোগ্য পুষ্টিকর বীজ থাকে।
কাঁঠালের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতাঃ
নিচে কাঁঠালের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলঃ
কাঁঠালের বিচির উপকারিতা (kathaler bichir upokarita):
হাড়কে কে সুগঠিত করতে সাহায্য করেঃ
ম্যাগনেসিয়াম নামক অতি গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে ও হারকে মজবুত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।আমরা সকলেই জানি ক্যালসিয়াম আপনাদের শরীরের হাড়কে সুরক্ষা করনের মাধ্যমে মজবুত করে । কাঁঠালের বিচিতে থাকা উচ্চমাত্রার ম্যাগনেসিয়াম আমাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের শোষণ স্বাভাবিক রাখে। যার ফলে আমাদের শরীরের হাড় গুলো অনেক শক্তিশালী হয়।
কাঁঠালের বিচি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিনের খুব ভালো উৎসঃ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন আমাদের শরীরে ফ্রি রেডিকেল তৈরিতে বাধা প্রদান করে যার ফলে শরীরে কোন ক্রনিক রোগ বাসা বাঁধতে পারে না।বিশেষত ক্যান্সার রোগ। গবেষণায় দেখা গেছে কাঁঠালের বিচিতে থাকা এসকরবিক এসিড বা ভিটামিন সি এবং গ্যালিক অ্যাসিড শরীরে ফ্রি রেডিকেল তৈরিতে বাধা প্রদান করে।
সামারিঃ কাঁঠালের বিচি তে থাকা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড় মজবুত করে। আর এতে থাকা বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে ফ্রী রেডিকেল তৈরিতে বাধা প্রদান ফলে ক্যান্সার সহ ক্রনিক রোগ হয় না।
ব্যাকটেরিয়া বিরোধী গুণাগুণ আছেঃ
সম্প্রতি অনেক গবেষণা দেখা গেছে কাঁঠালের বিচির নির্যাস S.aureus, E. Coli এবং B. Megaterium গোত্রের ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কিছু ব্যাকটেরিয়া বিরোধী ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। কাঁঠালের বিচি-র পাউডার খাদ্য বিষক্রিয়া প্রতিরোধে কাজ করে।
আরও পড়ুনঃ আপনি কি জানেন? পটলের উপকারিতা ও অপকারিতা কি?
কাঁঠালের বিচি ও ডায়াবেটিসঃ
কাঁঠালের বিচি ডায়াবেটিসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।রক্তে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কাঁঠালের বিচি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ-এ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । ডায়াবেটিসে আক্রান্ত গর্ভবতী গিনিপিগ এর উপর গবেষণায় দেখা গেছে। কাঠালের বিচির নির্যাস খাওয়ানোর মাধ্যমে গর্ভবতী গিনিপিগ এর ডায়াবেটিস উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমানো সম্ভব হয়েছে। যদিওকাঁঠালের বিচির ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপরে আরো গবেষণা চলমান রয়েছে।
সামারিঃকাঁঠালের বিচিতে ব্যাকটেরিয়া বিরোধী গুণাগুণ রয়েছে।এটি খাদ্য বিষক্রিয়া প্রতিরোধে ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে কাঁঠালের বিচি তে থাকা বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বিশেষ করে এতে থাকা flavonoids, saponins, এবং phenolics নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এমনকি ডিএনএ ড্যামেজ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাম্প্রতিক সময়ের এক টেস্টটিউব স্টাডিতে দেখা গেছে কাঁঠালের বিচি এক্সট্রা ক্যান্সারআস ব্লাড ভেসেল ৬১% পর্যন্ত তৈরিতে বাধা প্রদান করে।
হজম ক্রিয়া স্বাভাবিক করতে সাহায্য করেঃ
কাঁঠালের বিচিতে অনেক দ্রবীভূত ও অদ্রবিহিত ফাইবার বা আঁশ থাকে, যা আমাদের কোলন কে পরিষ্কার করনের মাধ্যমে বায়োল মুভমেন্ট ও মলকে নরম করার মাধ্যমে স্বাভাবিক ও পরিষ্কার রাখে। এছাড়াও কাঠালের বিচিতে থাকা ফাইবার প্রিবায়াওটিক হিসেবে আমাদের গাটে থাকা প্রবায়টিক এর খাবার হিসেবে কাজ করে থাকে। আর উপকারী ব্যাকটেরিয়া হজম ক্রিয়া ও ইমিউনিটি স্বাভাবিক রাখতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অধআর।।ফাইবারের কারণে শরীরে ইনফ্লামেটরি বাউল ডিজিজ ও hemorrhoids বা পাইলসের মতো রোগ প্রতিরোধে কাঁঠালের বিচি কাজ করে।
সামারিঃ কাঁঠালের বিচিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন flavonoids, saponins, এবং phenolics ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ডিএনএ ড্যামেজ প্রতিরোধে সহায়ক। এছাড়াও, এতে থাকা দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ফাইবার হজম ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে।
কাঁঠালের বিচি মানসিক চাপ এবং ত্বকের রোগ নিরাময়ে সহায়কঃ
কাঁঠালের বীজে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং অন্যান্য মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস থাকে। যা মানসিক চাপ কমাতে এবং বিভিন্ন ত্বকের রোগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে এবং স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য কাঁঠালের বীজ খুবই কার্যকর।
রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সহায়কঃ
কাঁঠালের বীজ আয়রনের একটি চমৎকার উৎস। কাঁঠালের বীজ খেলে আপনার দৈনিক আয়রনের চাহিদার প্রায় পুড়োটাই পূরণ হয়ে যায়। কাঁঠালের বীজ আয়রনসমৃদ্ধ খাদ্য হওয়ায় রক্তাল্পতা এবং অন্যান্য রক্তজনিত সমস্যার ঝুঁকি কমায়। আয়রন মস্তিষ্ক ও হৃদপিণ্ডকে সুস্থ এবং শক্তিশালী রাখে।
সুস্থ চুল ও ভালো দৃষ্টিশক্তির জন্য কাঁঠালের বিচি অনন্যঃ
কাঁঠালের বীজ ভালো দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখতে সহায়ক কারণ এতে ভিটামিন এ থাকে। ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিগুলির মধ্যে একটি, এবং এই ভিটামিনসমৃদ্ধ খাদ্য রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ চুলের স্বাস্থ্যও উন্নত করে এবং ভঙ্গুর চুল নষ্ট ও ঝরে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
সামারিঃ কাঁঠালের বিচি প্রোটিন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসে সমৃদ্ধ। যা মানসিক চাপ কমাতে, ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায়, রক্তাল্পতা প্রতিরোধে, এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
কাঁঠালের বিচি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ
কাঁঠালের বিচিতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল গুণাগুণ এবং ভিটামিন এ ও সি-এর মতো পুষ্টি উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকে। যা সংক্রমক ব্যাধি প্রতিরোধ করতে সহায়ক এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, একটি সুরক্ষামূলক ঢাল হিসেবে কাজ করে। কাঁঠালের বীজ থেকে প্রাপ্ত জ্যাকালিন নামক প্রোটিনটি বিজ্ঞানসম্মতভাবে এইচ.আই.ভি (HIV) ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটি খাদ্যজনিত রোগ প্রতিরোধ করে এবং বিভিন্ন ধরণের ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসজনিত সংক্রমণের চিকিৎসায় সহায়তা করে।
কাঁঠালের বিচি পেশি গঠন করেঃ
কাঁঠালের বীজে উচ্চমানের প্রোটিন থাকে, যা পেশি গঠনে সহায়ক। কাঁঠাল থেকে আমরা যে প্রোটিন পাই তা ক্ষতিকর কোলেস্টেরলমুক্ত।
অজীর্ণতা প্রতিরোধ করেঃ
গুঁড়ো করা কাঁঠালের বীজ অজীর্ণতা থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দিতে সক্ষম। প্রথমে বীজগুলো রোদে শুকিয়ে নিন এবং তারপর সেগুলো গুঁড়ো করে নিন। এই গুঁড়োটি সংরক্ষণ করুন এবং অজীর্ণতার জন্য এটি একটি দ্রুত, ঘরোয়া প্রতিকার হিসাবে ব্যবহার করুন। এছাড়াও, কাঁঠালের বীজ সরাসরি খেতে পারেন কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য, কারণ এটি খাদ্য আঁশের একটি সমৃদ্ধ উৎস।
সামারিঃ কাঁঠালের বিচিতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ভাইরাল গুণাগুণ, ভিটামিন এ ও সি রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা জ্যাকালিন প্রোটিন HIV-এর বিরুদ্ধে কার্যকর। এছাড়া, এর প্রোটিন পেশি গঠনে এবং গুঁড়ো অজীর্ণতা প্রতিরোধে সহায়ক।
আরও পড়ুনঃ কবুতরের মাংসের চমৎকার কিছু পুষ্টিগুণ !
ত্বকের বলিরেখা এড়াতে কাঁঠালের বীজঃ
ত্বকে বলিরেখা এড়াতে কাঁঠালের একটি বীজ নিয়ে ঠান্ডা দুধে সাথে কিছুক্ষণ মসৃণভাবে পিষে নিন। এই মিশ্রণটি নিয়মিত আপনার মুখে প্রয়োগ করুন যাতে সূক্ষ্ম বলি রেখাগুলো দূরে হতে থাকে। এটি আপনার ত্বককে তারুণ্যের উজ্জ্বলতা দিতে সহায়ক। কাঁঠাল বীজ আপনার ত্বকের টেক্সচার উন্নত করার জন্যও চমৎকার কাজ করে। বীজগুলো দুধ এবং মধুর সাথে ভিজিয়ে রাখুন এবং একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। এটি সমানভাবে আপনার মুখে প্রয়োগ করুন এবং পুরোপুরি শুকাতে দিন। পরে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এ ছাড়াও কাঁঠালের বিচি নিম্নক্ত রোগেও বেশ কার্যকরঃ
- এটি লিভার বা পিত্তথলি সংক্রমণের কারনে সৃষ্ট গ্যাস্ট্রিক সমস্যার উপশমে সহায়ক হতে পারে।
- কাঁঠালের বীজের নির্যাস অন্ত্রের সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট রক্ত ও মিউকাসযুক্ত পানিযুক্ত মল থেকে মুক্তি দিতে সহায়ক হতে পারে।
- ভাজা কাঁঠালের বীজকে কামোদ্দীপক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
- এটি রক্তের glucose এর মাত্রা কমাতে সক্ষম।
- এটি হাড়ের ব্যথা এবং দুর্বলতা উপশমে সহায়ক।
- এটি জীবাণু দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণের ঘটনার হার কমাতে সাহায্য করে।
আরও পরুনঃ জেনে নিন স্বাস্থ্যকর জিরা পানি তৈরির নিয়ম
কাঁঠালের বিচির অপকারিতা (kathaler bichir opokarita):
কাঁঠালের বিচির উপকারিতা অনেক ক্ষতির দিক নেই বললেই ছলে। তবে কাঁঠালের বিচির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কাঁঠালের বিচির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলু নিম্নরুপঃ
- কাঁঠালের বীজে জ্যাকালিন নামে একটি প্রোটিন থাকে (যা একটি লেকটিন), যার অ্যান্টি-নিউট্রিশনাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। জ্যাকালিন অন্ত্রের অভ্যন্তরীণ আস্তরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা পুষ্টি শোষণে বিঘ্ন ঘটায়।
- অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁঠালের বীজ খাওয়া Dygestive System এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে পারে, যা পরিপাকতন্ত্রের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- যারা হজমজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তাদের কাঁঠালের বীজ খাওয়ার আগে অবশ্যই তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াে উচিত।
- গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানকালীন সময়ে কাঁঠালের বীজ খাওয়ার বিষয়ে তেমন কোন ক্ষতিকর দিক পরিলক্ষিত হয় নি। তবে গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানকালীন সময়ে কাঁঠালের বীজ খাওয়ার আগে তাদের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে খাওয়া উচিত।
- প্রবীণ ব্যক্তি এবং শিশুদেরও প্রয়োজন হলে কাঁঠালের বীজ পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত এবং কোনো স্বাস্থ্যে জনিত সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- কাঁঠালের বিচি কিছু মানুষের মধ্যে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তাই যাদের এলার্জিক সমস্যা আছে তাদের এটা পরিহার করাই ভাল।
- একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কাঁঠালের বীজের নির্যাস রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া ধীর করতে এবং এমনকি মানুষের মধ্যে রক্তের জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
কাঁঠালের বীজ নিম্নলিখিত ওষুধগুলো সাথে একত্রে গ্রহন করলে রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারেঃ
- অ্যাসপিরিন
- রক্ত পাতলা করার ওষুধ (অ্যান্টিকোঅ্যাগুল্যান্টস)
- অ্যান্টিপ্লেটলেট ওষুধ
- ননস্টেরয়ডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ (ইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেন)
যদি আপনি এমন ওষুধ গ্রহণ করেন যা রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, তবে কাঁঠালের বীজ বা এর পাউডার খাওয়া এড়ানো উচিত।
কাঁঠালের বিচির পুষ্টিগুণ/পুষ্টি উপাদান (kathaler bichir pustigun/pusti upadan)
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালের বিচিতে যে পুষ্টিগুণ বা পুষ্টি উপাদান থাকে তা নিম্নরুপ-
পুষ্টি উপাদান | প্রতি ১০০ গ্রামে থাকে |
পানি | ৬৪.৫ গ্রাম |
শর্করা | ৩৮.৪ গ্রাম |
প্রোটিন | ৭.০৪ গ্রাম |
ফাইবার বা আঁশ | ১.৫ গ্রাম |
ফ্যাট | ০.৪৩ গ্রাম |
আয়রন | ১.৫ গ্রাম |
পটাশিয়াম | ২১৬ মিঃগ্রাঃ |
ফসফরাস | ৯৭ মিঃগ্রাঃ |
সোডিয়াম | ৬৩.২ মিঃগ্রাঃ |
ম্যাগনেসিয়াম | ৫৪ মিঃগ্রাঃ |
ক্যালসিয়াম | ৫০ মিঃগ্রাঃ |
ভিটামিন-সি | ১১ মিঃগ্রাঃ |
ভিটামিন-বি২ | ০.৩ মিঃগ্রাঃ |
ভিটামিন-বি৬ | ০.২৫ মিঃগ্রাঃ |
ভিটামিন- এ | ১৭ আইঃউঃ |
কাঁঠালের বিচি খাওয়ার নিয়মঃ
- কাঁঠালের বিচি বিভিন্ন তরকারিতে ও মাছ-মাংসের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়।
- কাঁঠালের বিচি ভর্তা হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়।
- স্মুদি বানাতে যোগ করা যায়।
- একা একটি স্ন্যাকস হিসেবে ও ভেজে খাওয়া যায়।
- কাঁঠালের বীজগুলো গুঁড়ো করে ময়দা র মত তৈরি করে বেকিং বা রান্নায় ব্যবহার করা যায়।
শেষ কথাঃ
কাঁঠালের বীজ শুধু যে খাওয়ার যোগ্য একটি বীজ তাই-নয়, অত্যন্ত পুষ্টিকরও বটে। এগুলোর সাথে হজমশক্তি উন্নত করা এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণসহ বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য উপকারিতা যুক্ত রয়েছে। তবে, কাঁচা অবস্থায় খেলে এগুলো পুষ্টি শোষণে বাধা দিতে পারে এবং কিছু ওষুধ গ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
পরবর্তীবার যখন আপনি কাঁঠাল খাবেন, তখন এর সম্পূর্ণ সুবিধা নিতে সুস্বাদু, মিষ্টি ফলের সাথে বীজগুলোকেও উপভোগ করুন।
কাঁঠালের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত লেখাটা কেমন লাগল কমেন্ট বক্সে যাবেন। আপনাদের মতাম ও পরামর্শ আমাদেরকে অনুপ্রানিত করবে।